রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০০৮

লাউ চাষে লাখপতি


লাউ চাষে লাখপতি
নিজের চেষ্টা ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে লাউ চাষে সাফল্য পেয়েছেন নোয়াখালীর সেনবাগের কৃষক সফি উদ্দিন। তার গ্রামের বাড়ি সেনবাগ পৌর শহরের অর্জুনতলা এলাকায়। তিনি ক’বছর আগেও ছিলেন সরকারি চাকুরীজীবি। স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য সহকারি। ২০০১ সালে তিনি সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্ল্লেক্স থেকে অবসর গ্রহণ করেন। চাকরিতে থাকাকালীন সময়ে সততা ও সুনামের সাথে কর্মজীবন অতিবাহিত করেন। অবসরের পর থেকে ওতোপ্রাতভাবে জড়িয়ে পড়েন কৃষি কাজে। বছরের কোন সময় কোন সবজি চাষ করতে হবে তা ভালভাবে জেনে নেন তিনি। এভাবে বছরের সব সময়ে মওসুমী সবজির কারিগর বনে যান সফি উদ্দিন ভঁূইয়া। তার উৎপাদিত সবজি সারা বছর ধরে এ এলাকার উল্লেখ্যযোগ্য চাহিদা পূরণ করে থাকে।

সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শনের সময় কথা হয় সফল কৃষক সফি উদ্দিন ভঁূইয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, বিগত কয়েকটি বছরের মত এ বছরও বাড়ির পাশে উঁচু ৬০ শতাংশ জমিতে তিনি লাউ চাষ করেছেন। মোট জমিকে চার ভাগে ভাগ করে গত জুলাই মাসের শেষের দিকে বিভিন্ন জাতের যেমন- মেটাল হাইব্রিড, লাল তীর মাটিয়া, ডায়না বীজ লাগান। এই জমির মধ্যে তার নিজস্ব জায়গা মাত্র ১২ শতাংশ। বাকি জমি অন্যজনের কাছ থেকে লিজ নেয়া। তিনি আরও জানান, বীজ লাগানোর দেড় মাসের মাথায় সেপ্টেম্বর মাসে গাছে লাউ ধরতে শুরু করে। এর পরবর্তীতে বাজারজাতও শুরু করা হয়। প্রতি দু’দিন পর পর ৮০ থেকে ১০০টি লাউ বিক্রি করে থাকেন। কোন কোন দিন এর সংখ্যা আরও বেড়ে যায়, আবার সংখ্যা কমেও যায়। প্রতিটি লাউ বর্তমানে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা ধরে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। তবে বাজারের চাহিদা রয়েছে পর্যাপ্ত। এ বছর লাউর ভাল দাম পাওয়ায় তিনি বেশ খুশি।

সফি উদ্দিন আরও জানান, লাউ আবাদে বীজ, চাষাবাদ ও রক্ষণাবেক্ষণসহ নানা কাজে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ ক্ষেত থেকে শেষ পর্য- দেড় লাখ টাকার মত লাউ বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষি বিভাগের লোকজনের উল্ল্লেখযোগ্য কোন সাহায্য সহযোগিতা না থাকলেও তার নিজ অভিজ্ঞতার কারণে আজ সফলতার এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছেন।

তিনি তার অভিজ্ঞতার আলোকে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলেন- সার, কীটনাশক, শ্রমিকের মুজুরি বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকট উল্লেখযোগ্য সমস্যা। তার এ সাফল্য দেখে এলাকার আরও অনেক কৃষক তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কৃষি কাজে আত্মনিয়োগ করেছে। তিনি তাদেরকে বেশ উৎসাহের সাথে বলেন- বেকার না থেকে অযথা সময় নষ্ট না করে এ ধরনের কাজে সম্পৃক্ত হলে একদিকে যেমন অবসর সময়টা কাজে লাগবে অন্যদিকে এ এলাকায় সবজির চাহিদা পূরণ হবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক থেকেও স্বাবলম্বী হওয়া যাবে।
-খোরশেদ আলম, নোয়াখালী

কোন মন্তব্য নেই: