বার্ড ফ্লু প্রতিরোধে দরকার সার্বিক প্রস্তুতি
আবারও দেখা দিয়েছে বার্ড ফ্লু ভাইরাস। মহামারি আকারে না ছড়ালেও কুড়িগ্রাম সীমা- এলাকার দুটি খামারে, সাভারের একটিতে, নরসিংদীতে দুটিতে বার্ড ফ্লু শনাক্ত করা হয়েছে। ২৬ ডিসেম্বর রাজারহাটের আমতলী গ্রামের এক পোল্টি ফার্মে ২৯৭টি মুরগি এবং ১২৫টি ডিম ধ্বংস করা হয়েছে। পাশাপাশি ইতিমধ্যে একদিনের বাচ্চার দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমে এখন ৩ থেকে ৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাও অনেককে কিনছে না। সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টে থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বার্ড ফ্লু কী ও কেন? বার্ড ফ্লু হচ্ছে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা। যা আপাতদৃষ্টিতে মুরগি বা যেকোন পাখির একটি মারাত্মক সংক্রামক ভাইরাসজনিত ব্যধি। ১০০ বছরেরও আগে ইতালিতে প্রথম এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস শনাক্ত হয়। একটি সময় পর্য- বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত ছিলেন, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে সাধারণত পাখি ও শুকর ছাড়া অন্যান্য প্রজাতির প্রাণী আক্রা- হয় না। তবে ১৯৯৭ সালে প্রথম হংকংয়ে মুরগি থেকে মানুষের দেহে এই ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। একবারে ১৮ ব্যক্তিকে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রা- অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এর মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু ঘটে। বিজ্ঞানীদের গবেষণা উঠে এসেছে যে, ১৫টি এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস টাইপের মধ্যে H5N1 কয়েকটি কারণে বিশেষ উদ্বেগজনক ও মারাত্মক। এই টাইপের ভাইরাসের দ্রুত বিবর্তন ঘটে যার মধ্যে রয়েছে মানুষের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করার ক্ষমতা। যে সম- পাখি এই ভাইরাসে আক্রা- হওয়ার পরও বেঁচে থাকে তাদের শ্বাস ও বিষ্ঠা থেকে কমপক্ষে ১০ দিন পর্য- এই ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগ পর্য- ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসার জন্য চারটি ওষুধের কথা শোনা যায়। এগুলো হচ্ছে এমানটাডিন (Amantadine), রিমানটিডিন (Rimantidine), টমিফ্লু (Tamiflue) এবং রেলেঞ্জা (Relanza)। এর মধ্যে প্রথম দুটি ওষুধ H5N1 সংক্রমণের জন্য কার্যকর নয়। পরবর্তী দুটি ওষুধ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মারাত্মকতা হ্রাস করে। পৃথিবীর কোন কোন দেশে বার্ড ফ্লুর ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হচ্ছে। সরকার উদ্যোগ নিলে তা আমাদের দেশে দ্রুত আমদানি করা সম্ভব।
২০০৭ সালের ২১ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম বার্ড ফ্লু শনাক্ত হবার পর গত ৩১ ডিসেম্বর ২০০৮ সাল পর্য- মাত্র ২১ মাসে এ রোগ দেশের ৪৭টি জেলার ১৪১ উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে। মোট ২৯০টি ফার্মে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। বার্ড ফ্লুতে এবং বার্ড ফ্লুর বি-ার রোধে নেয়া ব্যবস্থায় এ পর্য- ৫৫০টি ফার্মে ১৬ লাখ ৪৫ হাজারেরও বেশি মুরগি মারা গেছে অথবা নিধন করা হয়েছে। নিধন করা মুরগির জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
খোঁয়াড় ও ফার্মে পালান করা মুরগি ও হাঁস বর্তমানে ৪০ লাখ পরিবারে নিয়মিত আয়ের এক বিরাট অংশ। ১ কোটি ৬০ লাখ গ্রামীণ মহিলা দেশি জাতের মুরগি পালন করে। ১লাখ ২৪ হাজার কৃষক জড়িত-ভুট্টা, মাছ ও অন্যান্য পোল্টিফিড উৎপাদনে। ৭৮% ডিম, ৮৬% মাংস আসে খোঁয়ার (গৃহপালিত)- এর মুরগি থেকে। আমাদের দেশে সব ধরণের মাংসের মোট উৎপাদনের এক তৃতীয়াংশ আসে পোল্টিখাত থেকে। বাৎসরিক হাঁস-মুরগির মাংস উৎপাদনের পরিমাণ মাথাপিছু ২ কেজি। মাথাপিছু বাৎসরিক ডিম উৎপাদনের পরিমাণ ৩৫টি।
লক্ষণসমূহঃ বার্ড ফ্লু ভাইরাসে আক্রা- হওয়ার ৩ থেকে ১০ দিন পর রোগের লক্ষণ টের পাওয়া যায়। আক্রা- পাখির পালক উসকোখুসকো হয়ে যায়। মাথার ঝুঁটির গোড়ায় রক্তক্ষরণ হয়। ক্ষুধামন্দা ও অবসাদগ্র- হয়ে পড়ে। পায়ের পাতা ও হাফ-জয়েন্টের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে রক্ত জমে যায় ও রক্তক্ষরণ হয়। ডিম উৎপাদন কমে যায় ইত্যাদি।
বার্ড ফ্লু ভাইরাস যেভাবে ছড়ায়ঃ রুগ্ন পাখির বিষ্ঠা থেকে। রুগ্ন পাখির শ্লেষ্মা ও লালা থেকে। যারা রুগ্ন পাখি পরিচর্যা করে, তাদের দ্বারা। আক্রা- পাখির সরাসরি সংস্পর্শে এলে। পাখির চারণক্ষেত্র-হাওড়-বাওড়, দীঘি-নদী-জলাশয় ইত্যাদির পানি ব্যবহারে। রুগ্ন পাখির ব্যবহৃত নানা উপকরণ- খাঁচা, খোঁয়াড়, রিকশা- ভ্যান ডিমের টে্্র ইত্যাদি থেকে।
রোগ বি-ারের মাধ্যমঃ পাখি থেকে। পাখি থেকে মানুষ (খুব কম। ২০০৩ সাল থেকে এ পর্য- ৩০০-এর কম। তবে মৃত্যুহার খুবই উচ্চ (৬৪%)। মানুষ থেকে মানুষে (এটাই সবচেয়ে ভয়ের। ১৯১৮, ১৯৫৭ এবং ১৯৬৭- তে এটা হয়েছিল। জাতিসংঘের ইনফ্লুয়েঞ্জা সমন্বক ড· ডেভিড নাবারোর আশঙ্কা, ঠিক সময়ে প্রতিরোধ করা না গেলে আগামীর ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারিতে মৃত্যের সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে ১৫ কোটি পর্য- হতে পারে)।
প্রতিরোধ ও প্রস্তুতিঃ জবাইর পরঃ জবাই করা হাঁস-মুরগি উঠানে ছুড়ে ফেলবেন না। রক্ত, পালক, নাড়ি-ভঁূড়ি, নখ, চামড়া একটি পাত্রে রাখুন। পরে এসব বর্জø ৩ ফুট গভীর গর্তে পুঁতে ফেলুন। দা-বঁটি-ছুরি ও হাত সাবান দিয়ে টিউবওয়েলের পানিতে ভাল করে ধুয়ে নেবেন। ময়লা হাত থেকে শতকরা আশিভাগ রোগে জন্ম হয়। হাত সব সময় পরিষ্কার রাখুন।
যেভাবে হাত ধুতে হবেঃ দুই হাতের কব্জি পর্য- সাবান দিয়ে, ফেনা তুলে, রগড়ে রগড়ে, অ-ত ৩০ সেকেন্ড হাতের পাঞ্জার দুই পিঠ, আঙ্গুলের ফাঁক, নখের ভেতর ভালভাবে ধুতে হবে। যে কোন ধরণের খাদ্যদ্রব্য ছোঁয়ার আগে, খাবারের আগে, টয়লেট ব্যবহারের পর, শিশুর মল-মূত্র সাফ করার পর, এ ছাড়া দিনে কয়েকবার এমনিতেই সাবান দিয়ে হাত ধোবেন।
গণসচেতনতাঃ বার্ড ফ্লু প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। এক্ষত্রে পোষ্টার, লিফলেট, মাইকিং, গ্রাম নাটক, গণসঙ্গীত ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। বার্ড ফ্লু থেকে বাঁচা খুবই সহজ। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে কঠোরভাবে। যারা মুরগির ফার্মে কাজ করেন কিংবা যে বাড়ির মুরগির বার্ড ফ্লু হয়েছে তাদের কারও গায়ে মাথায় ব্যথা করে জ্বর আসলে তাকে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তিনি যে হাঁস-মুরগির ফার্মে কাজ করেন কিংবা রোগির বাড়িতে যে বার্ড ফ্লু হয়েছে সে কথা ডাক্তারকে জানাতে হবে।
বার্ড ফ্লু রোধে স্বাস্থ্যবিধিঃ সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। হাঁচি-কাশি নিয়ন্ত্রণ। কফ-থুথু না ফেলা। শিশুদের হাঁস-মুরগি থেকে দূরে রাখা। খোঁয়াড় পরিষ্কার রাখা। খোঁয়াড় পরিষ্কার করার সময় কাপড়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা। ঘর থেকে বাইরে খোঁয়াড় সরিয়ে নেয়া। মুরগির বিষ্ঠা মুখবন্ধ গর্তে ফেলা। জবাইর পর মুরগিকে একটি প্লাস্টিকের পাত্রে রাখুন যাতে সব রক্ত ওই পাত্রে জমা থাকে। জবাই করে মুরগিকে উঠানে ছুড়ে ফেলবেন না। এতে মুরগির রক্ত থেকে রোগ ছড়াতে পারে। জবাইর পর দা-বঁটি হাত ভালভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মুরগির পালক, চামড়া, নাড়ি-ভঁড়ি, নখ-ঠোঁট, রক্ত বাড়ির এককোণে ২ হাত গভীর গর্ত করে পুঁতে রাখুন। অথবা পুডিযে ফেলুন। যেখানে কাঁচা মাংস রাখা হয়েছিল সে স্থান সাবান দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। মাংস ভাল করে কষিয়ে রান্না করুন। সাবান অথবা সোডা গোলা পানিতে ভাল করে ধুয়ে তবেই ডিম ঘরে তুলবেন। ডিম পূর্ণ সিদ্ধ অথবা পূর্ণ ভাঁজি করে খাবেন। মরা হাঁস-মুরগি পুড়িয়ে অথবা ২ হাত গর্ত করে পুঁতে ফেলুন। পলিথিন, কাগজ অথবা গাছের পাতা দিয়ে মরা পাখি গর্তে ফেলুন। সাথে সাথে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।
বার্ড ফ্লু কী ও কেন? বার্ড ফ্লু হচ্ছে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা। যা আপাতদৃষ্টিতে মুরগি বা যেকোন পাখির একটি মারাত্মক সংক্রামক ভাইরাসজনিত ব্যধি। ১০০ বছরেরও আগে ইতালিতে প্রথম এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস শনাক্ত হয়। একটি সময় পর্য- বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত ছিলেন, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে সাধারণত পাখি ও শুকর ছাড়া অন্যান্য প্রজাতির প্রাণী আক্রা- হয় না। তবে ১৯৯৭ সালে প্রথম হংকংয়ে মুরগি থেকে মানুষের দেহে এই ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। একবারে ১৮ ব্যক্তিকে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রা- অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এর মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু ঘটে। বিজ্ঞানীদের গবেষণা উঠে এসেছে যে, ১৫টি এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস টাইপের মধ্যে H5N1 কয়েকটি কারণে বিশেষ উদ্বেগজনক ও মারাত্মক। এই টাইপের ভাইরাসের দ্রুত বিবর্তন ঘটে যার মধ্যে রয়েছে মানুষের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করার ক্ষমতা। যে সম- পাখি এই ভাইরাসে আক্রা- হওয়ার পরও বেঁচে থাকে তাদের শ্বাস ও বিষ্ঠা থেকে কমপক্ষে ১০ দিন পর্য- এই ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগ পর্য- ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসার জন্য চারটি ওষুধের কথা শোনা যায়। এগুলো হচ্ছে এমানটাডিন (Amantadine), রিমানটিডিন (Rimantidine), টমিফ্লু (Tamiflue) এবং রেলেঞ্জা (Relanza)। এর মধ্যে প্রথম দুটি ওষুধ H5N1 সংক্রমণের জন্য কার্যকর নয়। পরবর্তী দুটি ওষুধ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মারাত্মকতা হ্রাস করে। পৃথিবীর কোন কোন দেশে বার্ড ফ্লুর ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হচ্ছে। সরকার উদ্যোগ নিলে তা আমাদের দেশে দ্রুত আমদানি করা সম্ভব।
২০০৭ সালের ২১ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম বার্ড ফ্লু শনাক্ত হবার পর গত ৩১ ডিসেম্বর ২০০৮ সাল পর্য- মাত্র ২১ মাসে এ রোগ দেশের ৪৭টি জেলার ১৪১ উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে। মোট ২৯০টি ফার্মে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। বার্ড ফ্লুতে এবং বার্ড ফ্লুর বি-ার রোধে নেয়া ব্যবস্থায় এ পর্য- ৫৫০টি ফার্মে ১৬ লাখ ৪৫ হাজারেরও বেশি মুরগি মারা গেছে অথবা নিধন করা হয়েছে। নিধন করা মুরগির জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
খোঁয়াড় ও ফার্মে পালান করা মুরগি ও হাঁস বর্তমানে ৪০ লাখ পরিবারে নিয়মিত আয়ের এক বিরাট অংশ। ১ কোটি ৬০ লাখ গ্রামীণ মহিলা দেশি জাতের মুরগি পালন করে। ১লাখ ২৪ হাজার কৃষক জড়িত-ভুট্টা, মাছ ও অন্যান্য পোল্টিফিড উৎপাদনে। ৭৮% ডিম, ৮৬% মাংস আসে খোঁয়ার (গৃহপালিত)- এর মুরগি থেকে। আমাদের দেশে সব ধরণের মাংসের মোট উৎপাদনের এক তৃতীয়াংশ আসে পোল্টিখাত থেকে। বাৎসরিক হাঁস-মুরগির মাংস উৎপাদনের পরিমাণ মাথাপিছু ২ কেজি। মাথাপিছু বাৎসরিক ডিম উৎপাদনের পরিমাণ ৩৫টি।
লক্ষণসমূহঃ বার্ড ফ্লু ভাইরাসে আক্রা- হওয়ার ৩ থেকে ১০ দিন পর রোগের লক্ষণ টের পাওয়া যায়। আক্রা- পাখির পালক উসকোখুসকো হয়ে যায়। মাথার ঝুঁটির গোড়ায় রক্তক্ষরণ হয়। ক্ষুধামন্দা ও অবসাদগ্র- হয়ে পড়ে। পায়ের পাতা ও হাফ-জয়েন্টের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে রক্ত জমে যায় ও রক্তক্ষরণ হয়। ডিম উৎপাদন কমে যায় ইত্যাদি।
বার্ড ফ্লু ভাইরাস যেভাবে ছড়ায়ঃ রুগ্ন পাখির বিষ্ঠা থেকে। রুগ্ন পাখির শ্লেষ্মা ও লালা থেকে। যারা রুগ্ন পাখি পরিচর্যা করে, তাদের দ্বারা। আক্রা- পাখির সরাসরি সংস্পর্শে এলে। পাখির চারণক্ষেত্র-হাওড়-বাওড়, দীঘি-নদী-জলাশয় ইত্যাদির পানি ব্যবহারে। রুগ্ন পাখির ব্যবহৃত নানা উপকরণ- খাঁচা, খোঁয়াড়, রিকশা- ভ্যান ডিমের টে্্র ইত্যাদি থেকে।
রোগ বি-ারের মাধ্যমঃ পাখি থেকে। পাখি থেকে মানুষ (খুব কম। ২০০৩ সাল থেকে এ পর্য- ৩০০-এর কম। তবে মৃত্যুহার খুবই উচ্চ (৬৪%)। মানুষ থেকে মানুষে (এটাই সবচেয়ে ভয়ের। ১৯১৮, ১৯৫৭ এবং ১৯৬৭- তে এটা হয়েছিল। জাতিসংঘের ইনফ্লুয়েঞ্জা সমন্বক ড· ডেভিড নাবারোর আশঙ্কা, ঠিক সময়ে প্রতিরোধ করা না গেলে আগামীর ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারিতে মৃত্যের সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে ১৫ কোটি পর্য- হতে পারে)।
প্রতিরোধ ও প্রস্তুতিঃ জবাইর পরঃ জবাই করা হাঁস-মুরগি উঠানে ছুড়ে ফেলবেন না। রক্ত, পালক, নাড়ি-ভঁূড়ি, নখ, চামড়া একটি পাত্রে রাখুন। পরে এসব বর্জø ৩ ফুট গভীর গর্তে পুঁতে ফেলুন। দা-বঁটি-ছুরি ও হাত সাবান দিয়ে টিউবওয়েলের পানিতে ভাল করে ধুয়ে নেবেন। ময়লা হাত থেকে শতকরা আশিভাগ রোগে জন্ম হয়। হাত সব সময় পরিষ্কার রাখুন।
যেভাবে হাত ধুতে হবেঃ দুই হাতের কব্জি পর্য- সাবান দিয়ে, ফেনা তুলে, রগড়ে রগড়ে, অ-ত ৩০ সেকেন্ড হাতের পাঞ্জার দুই পিঠ, আঙ্গুলের ফাঁক, নখের ভেতর ভালভাবে ধুতে হবে। যে কোন ধরণের খাদ্যদ্রব্য ছোঁয়ার আগে, খাবারের আগে, টয়লেট ব্যবহারের পর, শিশুর মল-মূত্র সাফ করার পর, এ ছাড়া দিনে কয়েকবার এমনিতেই সাবান দিয়ে হাত ধোবেন।
গণসচেতনতাঃ বার্ড ফ্লু প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। এক্ষত্রে পোষ্টার, লিফলেট, মাইকিং, গ্রাম নাটক, গণসঙ্গীত ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। বার্ড ফ্লু থেকে বাঁচা খুবই সহজ। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে কঠোরভাবে। যারা মুরগির ফার্মে কাজ করেন কিংবা যে বাড়ির মুরগির বার্ড ফ্লু হয়েছে তাদের কারও গায়ে মাথায় ব্যথা করে জ্বর আসলে তাকে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তিনি যে হাঁস-মুরগির ফার্মে কাজ করেন কিংবা রোগির বাড়িতে যে বার্ড ফ্লু হয়েছে সে কথা ডাক্তারকে জানাতে হবে।
বার্ড ফ্লু রোধে স্বাস্থ্যবিধিঃ সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। হাঁচি-কাশি নিয়ন্ত্রণ। কফ-থুথু না ফেলা। শিশুদের হাঁস-মুরগি থেকে দূরে রাখা। খোঁয়াড় পরিষ্কার রাখা। খোঁয়াড় পরিষ্কার করার সময় কাপড়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা। ঘর থেকে বাইরে খোঁয়াড় সরিয়ে নেয়া। মুরগির বিষ্ঠা মুখবন্ধ গর্তে ফেলা। জবাইর পর মুরগিকে একটি প্লাস্টিকের পাত্রে রাখুন যাতে সব রক্ত ওই পাত্রে জমা থাকে। জবাই করে মুরগিকে উঠানে ছুড়ে ফেলবেন না। এতে মুরগির রক্ত থেকে রোগ ছড়াতে পারে। জবাইর পর দা-বঁটি হাত ভালভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মুরগির পালক, চামড়া, নাড়ি-ভঁড়ি, নখ-ঠোঁট, রক্ত বাড়ির এককোণে ২ হাত গভীর গর্ত করে পুঁতে রাখুন। অথবা পুডিযে ফেলুন। যেখানে কাঁচা মাংস রাখা হয়েছিল সে স্থান সাবান দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। মাংস ভাল করে কষিয়ে রান্না করুন। সাবান অথবা সোডা গোলা পানিতে ভাল করে ধুয়ে তবেই ডিম ঘরে তুলবেন। ডিম পূর্ণ সিদ্ধ অথবা পূর্ণ ভাঁজি করে খাবেন। মরা হাঁস-মুরগি পুড়িয়ে অথবা ২ হাত গর্ত করে পুঁতে ফেলুন। পলিথিন, কাগজ অথবা গাছের পাতা দিয়ে মরা পাখি গর্তে ফেলুন। সাথে সাথে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।
সাহারা তুষার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন