অগ্রাধিকার দিতে হবে কৃষিকে
আজ খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আরেকটি সবুজ বিপ্লব তথা পল্লী অবকাঠামোর উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ, দ্রব্যমূল্যের উর্ধµগতি নিয়ন্ত্রণসহ কৃষির প্রতিটি উপখাত যেমন- কৃষি, পোল্ট্রি, মৎস্য, পশুসম্পদ, ইত্যাদিও প্রতিটি ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন পর্যায় পর্যন্ত সমস্যার ও উন্নয়নের লক্ষ্য নির্ধারণ জাতির কাছে সময়ের দাবি।
পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে কৃষি ও কৃষকের জন্য নতুন সবুজ বিপ্লবের অধ্যায় সূচনার করা। পাশাপাশি খাদ্য ঘাটতি কাটিয়ে উঠে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা। কৃষির আধুনিক ও লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার করা এবং জাতীয়ভাবে পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য কিছু সুপারিশ সরকারে কাছে তুলে ধরছি-
উচ্চফলনশীল জাতের ধান/হাইব্রিড ধান চাষ বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং সেই সাথে দেশিয় জাতসমূহ গবেষণা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সংরক্ষিত জার্মপ্লাজম হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ধান বীজের নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বীজ উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং সেই সাথে বীজ উৎপাদন ও গবেষণায় বিভিন্ন কোম্পানিকে এগিয়ে আসতে হবে। কোম্পানিসমূহ যাতে IRRI, BINA, BAU, SAU, BSMRAU, PSTU সহ বিভিন্ন সরকারি গবেষণা ও কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ ভাবে BRRI, FAO ইত্যাদি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কারিগরী সহায়তায় বিভিন্ন এলাকার কৃষি পরিবেশ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী মানসম্মত ও উন্নত বীজ কৃষকের সামনে নিয়ে আসতে পারে সেজন্য প্রয়োজনে ঋণ সুবিধা প্রদান পূর্বক ভর্তুকির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সার বিপণন ও সার ব্যবস্থাপনা উন্মুক্ত করতে হবে। বাজারে সারের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে সেই সাথে জমির স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য জমিতে শতকরা ৫০ ভাগ জৈবসার বা সবুজ সার ব্যবহারে কৃষককে উৎসাহিত করতে হবে। সারের ক্ষেত্রে কিছু নীতিগত পরিবর্তন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ যেমন- পোল্ট্রি বর্জ, শহরের বর্জøসহ অন্যান্য বর্জø যা আমরা যত্রতত্র ফেলে পরিবেশ দূষণ করছি বা বর্জ সমূহ ফেলে দিচ্ছি শুধু এমন উপাদান দ্বারা জৈবসার প্রস্তুত করলে দেশের মোট রাসায়নিক সারের ব্যবহার শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ হ্রাস পাবে। যার ফলে শুধু ভর্তুকিবাবদই সরকারের সাশ্রয় হবে ৩৫০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকা। সেই সাথে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় যেমনি হ্রাস পাবে তেমনি ভোক্তাও ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্য কিনতে পারবে। তাই দরকার জৈবসার ও রাসায়নিক সারের যৌথ ব্যবহার নিশ্চিত করে নীতিমালা প্রণয়ন।
কীটনাশকের যত্রতত্র ব্যবহারের পরিবর্তে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আলোকে বায়ো পেস্টিসাইড ব্যবহার ও কীটপতঙ্গ প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনের জন্য গবেষণায় জোড় দিতে হবে। সেই সাথে ভেজাল কীটনাশক ও সার ব্যবহার করে বা খারাপ মানের বীজ ব্যবহার করে কৃষক যাতে প্রতারিত না হয় সেই জন্য DAE কে শক্তিশালীসহ আইনের কিছু নীতিগত পরিবর্তন করে দেশি-বিদেশি সার, বীজ ও কীটনাশক কোম্পানিসমূহের পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও টায়ালসহ গবেষণায় সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।
কৃষি জমির ওপর অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়ন রোধে সরকার কৃষিজ জমির শ্রেণীবিন্যাস করে গ্রীনজোন বা কৃষি জোন ঘোষণা করলে পরিবেশ দূষন যেমনি রোধ হবে তেমনি কৃষি জমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে।
সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন সাধনসহ মৌসুমে বিদ্যুৎ ও ডিজেলের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পাম্প পরিচালনার ক্ষেত্রে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও BADC কর্মকর্তার সমন্বয়ে সমিতিসমূহ প্রতি এক বছর পরপর সমিতির ৭ জন বা ৯ জন সদস্যসহ কমিটি পরিবর্তিত হয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপদেশে পরিচালিত হলে এবং পাম্পের লভ্যাংশ সমিতির সদস্যেও শেয়ারের ভিত্তিতে পরবর্তীতে পাম্পের উন্নয়নসহ কৃষি আধুনিক যন্ত্রপাতি সমন্বয়ে কৃষি উপকরণ ও সেবা সাপোর্ট সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত হতে পারে-
কৃষিপণ্য বিপণন ও সংরক্ষণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
দেশের শতকরা ১০০ ভাগ ভূমির যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করা।
কৃষি ভিত্তিক শিল্পের ঋণ সুবিধা বৃদ্ধি ও সুদের হার কমিয়ে আনা।
জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগে থেকে বিকল্প জ্বালানি নিয়ে চিন্তা করা যার প্রেক্ষাপটে বিশ্বে ইতোমধ্যে বায়োডিজেল হিসেবে ভুট্টা, যাত্রফা, হংট্রি ইত্যাদির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মাধ্যমে কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য স্বল্পমূল্যে পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয় এবং পণ্য পরিবহনের ভাড়া হতে একটা অংশ সরকার ভর্তুকিবাবদ ব্যয় করে যা জ্বালানিতে ভর্তুকি প্রদান করে পরিবহন ভাড়া নির্ধারণ করে, তবে সাধারণ জনগণ উপকৃত হবে এবং বাজারে কৃষিপণ্য মূল্যের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে রেলওয়ে ওয়াগন ও পণ্যবাহী ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। এতে রেলওয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেবার মান বাড়াতে দ্রুতগামী ট্রেনসহ অন্যান্য সুবিধা দিতে হবে। সেই সাথে যদি স্টেশন ভিত্তিক নিলাম কেন্দ্রিক কাঁচামালসহ সকল পণ্যের পাইকারী বাজার গড়ে উঠে তবে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ই উপকৃত হবে।
বার্ড ফ্লু নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। এ শিল্পে বিকাশে ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে হালাল উপায়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংস ও ডিম প্রক্রিয়াজাত করে ক্রয়-বিক্রয় বাধ্যতামূলক করলে এবং তা নিয়ন্ত্রণ ও তদারকিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে খামারি ও ভোক্তা উভয় উপকৃত হত। পাশাপাশি বার্ড ফ্লু প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনে গবেষণা করতে হবে।
মৎস্য খাতে ও পশুসম্পদ খাতে অবকাঠামো উন্নয়ন বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণসহ আধুনিকায়ন আবশ্যক। এছাড়া ডেইরি খাতের উন্নয়নের জন্য সঠিক পরিকল্পনা সময়ের দাবি।
কৃষি শিল্প বিকাশের জন্য তথা সবুজ বিপ্লব ত্বরান্বিত করার জন্য এ শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান আবশ্যক। কৃষির বিভিন্ন উপখাতের আলোকে কৃষক, ব্যবসায়ী, গবেষক, পরিকল্পনা প্রণেতা, লেখক, চিন্তাবিদ ও শিক্ষাবিদের সমন্বয়ে উপকমিটি ও কৃষির জাতীয় সবুজ বিপ্লব কমিটি গঠন করে পত্রিকা, টিভি, রেডিওতে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন পরিকল্পনা, টেকসই প্রযুক্তি, উন্নত ও বিকল্প ভাবনা, ইত্যাদিও বিভিন্ন শ্রেণী হতে সংগ্রহ, পর্যালোচনা, পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ গবেষক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনে ব্যবহার করে, কৃষির বিভিন্ন নীতিমালা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক জরুরি কাজ হিসেবে তিন মাসের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তôবায়নের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সেই সাথে কৃষিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত হিসেবে মর্যাদা দিয়ে ক্ষুধা, দারিদ্র্যতা, সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত আত্মনির্ভর উন্নত সমুজ্জ্বল সবুজ বাংলার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে স্বাধীনতার স্বপ্নের সার্থকতার প্রজন্ম হিসেবে নতুন ইতিহাস গড়তে।
- কৃষিবিদ মোঃ ফসিউল আলম ভূঁইয়া মাসুম
পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে কৃষি ও কৃষকের জন্য নতুন সবুজ বিপ্লবের অধ্যায় সূচনার করা। পাশাপাশি খাদ্য ঘাটতি কাটিয়ে উঠে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা। কৃষির আধুনিক ও লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার করা এবং জাতীয়ভাবে পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য কিছু সুপারিশ সরকারে কাছে তুলে ধরছি-
উচ্চফলনশীল জাতের ধান/হাইব্রিড ধান চাষ বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং সেই সাথে দেশিয় জাতসমূহ গবেষণা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সংরক্ষিত জার্মপ্লাজম হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ধান বীজের নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বীজ উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং সেই সাথে বীজ উৎপাদন ও গবেষণায় বিভিন্ন কোম্পানিকে এগিয়ে আসতে হবে। কোম্পানিসমূহ যাতে IRRI, BINA, BAU, SAU, BSMRAU, PSTU সহ বিভিন্ন সরকারি গবেষণা ও কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ ভাবে BRRI, FAO ইত্যাদি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কারিগরী সহায়তায় বিভিন্ন এলাকার কৃষি পরিবেশ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী মানসম্মত ও উন্নত বীজ কৃষকের সামনে নিয়ে আসতে পারে সেজন্য প্রয়োজনে ঋণ সুবিধা প্রদান পূর্বক ভর্তুকির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সার বিপণন ও সার ব্যবস্থাপনা উন্মুক্ত করতে হবে। বাজারে সারের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে সেই সাথে জমির স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য জমিতে শতকরা ৫০ ভাগ জৈবসার বা সবুজ সার ব্যবহারে কৃষককে উৎসাহিত করতে হবে। সারের ক্ষেত্রে কিছু নীতিগত পরিবর্তন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ যেমন- পোল্ট্রি বর্জ, শহরের বর্জøসহ অন্যান্য বর্জø যা আমরা যত্রতত্র ফেলে পরিবেশ দূষণ করছি বা বর্জ সমূহ ফেলে দিচ্ছি শুধু এমন উপাদান দ্বারা জৈবসার প্রস্তুত করলে দেশের মোট রাসায়নিক সারের ব্যবহার শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ হ্রাস পাবে। যার ফলে শুধু ভর্তুকিবাবদই সরকারের সাশ্রয় হবে ৩৫০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকা। সেই সাথে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় যেমনি হ্রাস পাবে তেমনি ভোক্তাও ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্য কিনতে পারবে। তাই দরকার জৈবসার ও রাসায়নিক সারের যৌথ ব্যবহার নিশ্চিত করে নীতিমালা প্রণয়ন।
কীটনাশকের যত্রতত্র ব্যবহারের পরিবর্তে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আলোকে বায়ো পেস্টিসাইড ব্যবহার ও কীটপতঙ্গ প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনের জন্য গবেষণায় জোড় দিতে হবে। সেই সাথে ভেজাল কীটনাশক ও সার ব্যবহার করে বা খারাপ মানের বীজ ব্যবহার করে কৃষক যাতে প্রতারিত না হয় সেই জন্য DAE কে শক্তিশালীসহ আইনের কিছু নীতিগত পরিবর্তন করে দেশি-বিদেশি সার, বীজ ও কীটনাশক কোম্পানিসমূহের পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও টায়ালসহ গবেষণায় সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।
কৃষি জমির ওপর অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়ন রোধে সরকার কৃষিজ জমির শ্রেণীবিন্যাস করে গ্রীনজোন বা কৃষি জোন ঘোষণা করলে পরিবেশ দূষন যেমনি রোধ হবে তেমনি কৃষি জমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে।
সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন সাধনসহ মৌসুমে বিদ্যুৎ ও ডিজেলের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পাম্প পরিচালনার ক্ষেত্রে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও BADC কর্মকর্তার সমন্বয়ে সমিতিসমূহ প্রতি এক বছর পরপর সমিতির ৭ জন বা ৯ জন সদস্যসহ কমিটি পরিবর্তিত হয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপদেশে পরিচালিত হলে এবং পাম্পের লভ্যাংশ সমিতির সদস্যেও শেয়ারের ভিত্তিতে পরবর্তীতে পাম্পের উন্নয়নসহ কৃষি আধুনিক যন্ত্রপাতি সমন্বয়ে কৃষি উপকরণ ও সেবা সাপোর্ট সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত হতে পারে-
কৃষিপণ্য বিপণন ও সংরক্ষণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
দেশের শতকরা ১০০ ভাগ ভূমির যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করা।
কৃষি ভিত্তিক শিল্পের ঋণ সুবিধা বৃদ্ধি ও সুদের হার কমিয়ে আনা।
জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগে থেকে বিকল্প জ্বালানি নিয়ে চিন্তা করা যার প্রেক্ষাপটে বিশ্বে ইতোমধ্যে বায়োডিজেল হিসেবে ভুট্টা, যাত্রফা, হংট্রি ইত্যাদির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মাধ্যমে কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য স্বল্পমূল্যে পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয় এবং পণ্য পরিবহনের ভাড়া হতে একটা অংশ সরকার ভর্তুকিবাবদ ব্যয় করে যা জ্বালানিতে ভর্তুকি প্রদান করে পরিবহন ভাড়া নির্ধারণ করে, তবে সাধারণ জনগণ উপকৃত হবে এবং বাজারে কৃষিপণ্য মূল্যের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে রেলওয়ে ওয়াগন ও পণ্যবাহী ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। এতে রেলওয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেবার মান বাড়াতে দ্রুতগামী ট্রেনসহ অন্যান্য সুবিধা দিতে হবে। সেই সাথে যদি স্টেশন ভিত্তিক নিলাম কেন্দ্রিক কাঁচামালসহ সকল পণ্যের পাইকারী বাজার গড়ে উঠে তবে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ই উপকৃত হবে।
বার্ড ফ্লু নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। এ শিল্পে বিকাশে ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে হালাল উপায়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংস ও ডিম প্রক্রিয়াজাত করে ক্রয়-বিক্রয় বাধ্যতামূলক করলে এবং তা নিয়ন্ত্রণ ও তদারকিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে খামারি ও ভোক্তা উভয় উপকৃত হত। পাশাপাশি বার্ড ফ্লু প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনে গবেষণা করতে হবে।
মৎস্য খাতে ও পশুসম্পদ খাতে অবকাঠামো উন্নয়ন বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণসহ আধুনিকায়ন আবশ্যক। এছাড়া ডেইরি খাতের উন্নয়নের জন্য সঠিক পরিকল্পনা সময়ের দাবি।
কৃষি শিল্প বিকাশের জন্য তথা সবুজ বিপ্লব ত্বরান্বিত করার জন্য এ শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান আবশ্যক। কৃষির বিভিন্ন উপখাতের আলোকে কৃষক, ব্যবসায়ী, গবেষক, পরিকল্পনা প্রণেতা, লেখক, চিন্তাবিদ ও শিক্ষাবিদের সমন্বয়ে উপকমিটি ও কৃষির জাতীয় সবুজ বিপ্লব কমিটি গঠন করে পত্রিকা, টিভি, রেডিওতে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন পরিকল্পনা, টেকসই প্রযুক্তি, উন্নত ও বিকল্প ভাবনা, ইত্যাদিও বিভিন্ন শ্রেণী হতে সংগ্রহ, পর্যালোচনা, পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ গবেষক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনে ব্যবহার করে, কৃষির বিভিন্ন নীতিমালা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক জরুরি কাজ হিসেবে তিন মাসের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তôবায়নের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সেই সাথে কৃষিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত হিসেবে মর্যাদা দিয়ে ক্ষুধা, দারিদ্র্যতা, সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত আত্মনির্ভর উন্নত সমুজ্জ্বল সবুজ বাংলার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে স্বাধীনতার স্বপ্নের সার্থকতার প্রজন্ম হিসেবে নতুন ইতিহাস গড়তে।
- কৃষিবিদ মোঃ ফসিউল আলম ভূঁইয়া মাসুম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন